এবার মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের সঙ্গে নতুন রেল সংযোগ স্থাপন করতে যাচ্ছে ভারত। চীনকে টেক্কা দিতে জি-২০ সম্মেলনে এমন একটি প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে নয়া দিল্লি। মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে প্রভাবিত করতে ভারতের এমন পদক্ষেপ। খবর আল জাজিরা।
এদিকে নতুন এই রেল করিডোর যেসব দেশকে যুক্ত করবে, তার মধ্যে রয়েছে- ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ইসরায়েল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এসব অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানো সহ জ্বালানি সরবরাহ এবং প্রযুক্তি সম্পর্ক তৈরি করাই মূল উদ্দেশ্য।
বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, বাইডেনের সুদূর প্রসারি চিন্তার প্রতিফলন হলো এ প্রকল্প। এর ফলে আমেরিকার নেতৃত্ব আরও দৃঢ় হবে। তিনি বলেন, এই প্রকল্প অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিবে এবং মধ্যপ্রাচ্য বাণিজ্যিক হাবে পরিণত হবে।
মূলত চীনের ‘বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ‘ পরিকল্পনাকে চাপে ফেলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন পরিকল্পনা সাজিয়েছে। যা জি-২০ দেশগুলোর দ্বারা বাস্তবায়িত করতে চান বাইডেন। বাইডেন একে বড় চুক্তি বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এর প্রয়োজনীয়তা কখনও শেষ হবে না।
জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, আজ আমরা এমন একটি সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি যা ভবিষ্যত প্রজন্মের বড় স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এ সংযোগ স্থাপন শুধুমাত্র মিউচ্যুয়াল ট্রেডই নয়, এটা হলো একাধিক দেশের মধ্যে মিউট্যুয়াল ট্রাস্ট বৃদ্ধির প্রকল্প।
আল জাজিরার সাংবাদিক ক্যাটরিনা ইউ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে রিপোর্ট করেছেন। এতে তিনি বলেছেন, ভারতের নেতারা একে গেম চেঞ্জার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। “তারা বলেন, এই অর্থনৈতিক করিডোর ভারতকে সঙ্গে নিয়েই তৈরি করা হয়েছে। যা মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত। ইউ বলেন, এটি রেললাইন এবং শিপিং লাইন নিয়ে গঠিত হবে, যা সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, জর্ডান এবং ইসরায়েলের মধ্য দিয়ে যাবে।
ক্যাটরিনা ইউ বলেন, এ ঘোষণার সময় চীনের প্রেসিডেন্ট উপস্থিত ছিলেন না। তবে এটা পরিস্কার যে, ২০১৩ সালে চীনের ঘোষণা দেওয়া বেল্ট এন্ড রোড ইন ইনিশিয়েটিভকে টেক্কা দিতে নতুন এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইন ইনিশিয়েটিভে এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপকে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছিল।
এদিকে জি-২০ সম্মেলনে ইউরোপী ইউনিয়ন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্র নতুন উদ্যোগ নিয়ে যে চুক্তি করেছে তা স্মারণীয় হয়ে থাকবে। কারণ ভারত চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইন ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে চায় না। ক্ষেত্রে নতুন এই উদ্যোগ ভারতের জন্য একমাত্র বিকল্প পথ।